শনিবার, ৪ আগস্ট, ২০১২

কবিতাগুচ্ছ- ৮














সুফি ড্যান্স

আজ এই মন উতলা ইস্তাম্বুলে, ঘনায়মান সন্ধ্যায়।

পার হয়ে এসেছি তরুবন হিজল, কৃষ্ণের তমাল
প্রাণ থর থর কাঁপিছে আমার মিলন আশায়।

তারা গাইছে গান মিলনের।

তারা তারার তলে পরেছে জামা শাদা শাদা
আর নাচছে ঘুরে ঘুরে ইস্তাম্বুলে
হাত তুলেছে উর্ধলোকে প্রাণ আকুল প্রেমে
যেন মেলেছে পাখা এই জোৎস্না রাতে।

কোমরে কালো ফিতা,ফিতা নয় বন্ধন এই সংসার লোকের
আকুপাকু পরাণ ছুটিতে বন্ধন।

আমি থাকি লালনের দেশে পাখি নিয়ে শার্টের নীচে
আমারও আত্মা যেতে চাইছে উর্ধলোকে
এই তোমাদের ভূমি হতে
তুর্কি ভাইয়েরা আমার ধরা পড়েছ খাঁচায়, ইস্তাম্বুলে।


গঞ্জে গুমরি উঠছে গান

গঞ্জে গুমরি উঠছে গান। মৎস বাজারে।

তারা মীন। জলে ছিল। জলকুমারী।
তারা আজ এলুমিনিয়ামের থালায় থালায়

খাবার টেবিলের উদ্দেশ্যে।

কোনকুমারী তোমার বিয়ের এত্তেলা এসেছে
দৈনিকের পাতায়, গুঞ্জন লেগেছে গঞ্জে

কার টেবিলে যাও কুমারী?

প্রাণ আমার গুমরি যায়।


প্রেমিকা

তোমার প্রেম করেছি গোপন, হাটে আর বাজারে
চালাক সেজেছি হাটুরেদের কাছে,যদি ঠকি যাই
এই ভয়ে, মদন যে দেশের প্রেম দেবতার নাম।

অপ্রেমিক কে স্মার্ট ভাবে এই দেশে
কোন সাহসে বলো দেখি তোমাকে
তোমারে লিখি কবিতা, প্রেমিকা আমার।

কবিতাগুচ্ছ-৭



জ্ঞান নদী পারাপার


গুরু পার হবেন জ্ঞান নদী

আমরা এসেছি আজ নদী তীরে
             দেখে ঢেউ থরহরি, উপরন্তু শীত

আমরা তীরে বসে গুনছি ঢেউ আর
ভাবছি জলেব মধ্যেই আছেন মৎস্যকন্যাগণ

আমাদের পাঠে মোটেই মন নেই
কী করে পার হবো জ্ঞান নদী
গুরুই হাবুডুবু

আমরা শর্টকার্ট পারের কথা ভাবছি

ওই যে দূরে রাখাল বালক,তাকে ডাকো
সে বানিয়েছে ভেলা কলাগাছের
তাই চড়ে ওপারে যাবো, জ্ঞাননদী পার হয়ে

আমরা এসেছি জ্ঞান নদী পার হয়ে
দ্যাখ,জল কাদা কিছুই গায়ে লাগেনি



নগর দুয়ারে গৌতম

নগর দুয়ারে কারা হাসে কাচঝরা
তারা কি জরা, মৃত্যুকে দেখেনি ?

দূর থেকে ধেয়ে এসে অগ্নিনদী
এ জনপদ মুছে দেবে
কালোজ্বরের কাঁপিয়ে মেদিনী
সকল মন্দির ভেঙ্গে দেবে
আর মৃত্যু মৌমাছির মত
শুকনো কালো ডানায় উড়ে এসে
নিয়ে যাবে ছায়াপ্রাণ

নগর দুয়ারে কারা হাসে কাচঝরা
তারা কি মৃতু কে দেখেনি ?

যযাতিও ফের ফিরে পেয়েছিলেন পুত্রের যৌবন
অবশেষে জরা তাকেও নিল
আজও মহাভারতের শুকনো পাতায় পাতায়
জেগে আছে তার হাহাকার

নগর দুয়ারে কারা হাসে কাচঝরা


ফুঁ-এর বাড়ি


নানা বাড়ি গেছিলাম বহুদিন পর নানা পীর
কাষ্ঠ দিয়ে বানিয়েছিলেন তাঁর ঘর
এই বার গিয়ে দেখি ইষ্ট দিয়ে তাঁরা তুলেছে দালান
জিগ্ঞাসি কী বৃত্তান্ত, কী খবর ?
মামা বলেন, জান তো বাপের ছিল ফুঁ-এর তেজারতি
ফুঁ-এই বানিয়েছি এই ঘর 



বেহুদা

না লইলাম আল্লাজির নাম, না লইলাম নারীর

কবিতাগুচ্ছ- ৬


আহমদ সিরাজের সাথে শেকড়ে


গান পাতার আড়ালে লুকিয়ে ছিলাম এতোকাল
আজ তাল পেয়ে বেজে উঠেছি সহসা
মনুতীরে

কী যে চুপি চুপি থাকা আনমনে, আপনমনে
শহরে শহরে ব্যাধেরা নেমেছে শব্দ শিকারে
তীরের ফলায় রক্তাক্ত সারাবন
বন্ধুরা যারা ছিল, মরেছে

আর আমি পালিয়ে উড়ে যাওয়া,লুকিয়ে থাকা
সামান্য কণ্ঠ পাখি, নিঃসঙ্গ ছিলাম,একা ছিলাম
                                  লুকিয়ে ছিলাম

আজ তাল পেয়ে এসেছি লোকালয়ে
গেয়ে উঠেছি গান মনুতীরে

ও গান পরাণ গেয়ে চল




আগুন শিকারী


ছাইয়ের ভেতর লুকিয়ে ছিল, যেই পড়তে গেছি ছাইভষ্ম
অমনি ছড়িয়ে আগুন পাতায় পাতায়
সবখানে

মৃতেরা রেখে গেছে লুকিয়ে আগুন ছাইভষ্মে
আর আমি উৎসুক বালক কী ভেবে পড়তে গেছি
ছাইভষ্ম কালো অক্ষরে
কী জানতাম তাতেই ছড়াবে আগুন

সবখানে- আমার ভেতরে


মা


এখনও যদি মা বলে ডাকি
কবরেরও দরোজা খুলে যাবে

মা ডাক এমনই মোহন 

কবিতাগুচ্ছ- ৫




মানে


সেই যে বলেছিলে হাওয়া দুলিয়ে -
       যা পাগল এসবের কি কোন মানে আছে
       যা কিছু মানে, টীকা টিপ্পনী,ফুটনোট, ভাষ্য ব্যাখ্যা
       সকলই বানানো, গাঁজাখোরি
       যারা খুঁজেছে তারাই উচ্ছন্নে গেছে 
       ভেবে দেখ বুদ্ধুর জীবন
       সিংহাসন ছেড়ে একা একা পথে পথে 
       আর আমাদেরও তাই শিখিয়েছে

কিন্তু, আমাদের আছে নখর ও শিং
আমরা তাই দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করেছি
 সহস্র বৎসর ধরে নিজেদের জীবন

আজ নিজেকে ছিঁড়ে খুঁড়ে জেনেছি
এ সবের কি কোন মানে আছে ?
মানে ছিল ? থাকার সম্ভাবনা আছে ?

যা কিছু নকল, যা কিছু বানানো
ছিঁড়ে চল, ফেড়ে চল ওরে আমার মন 



ফেরা


আজ বহুদিন পর গান এলো ধুলোপায়ে,ধূলিমলিন সন্ধ্যায়
চলেছেন দিনমনি অস্থাচলে,ক্লান্ত, মৃদুপায়

ও গান কোথায় ছিলে, কতদিন রক্তাক্ত দিন

কত যে কাতর আমি

ও গান আমাকে একলা ফেলে কোথায় ছিলে ?
আজ ফিরে এসেছো সন্ধ্যায়, রক্ত ধুলো মাখা পায় !

ও ছায়া কোলে এসো আবার মিলি
মৌনতার দীর্ঘরাতে



আলুবাদ্য


শামীম কবির ঘুমাতে গেছে বেশ আগে
আমিও ঘুমাতে গেছি বিষ্যুদবার শেষরাতে
শুক্ররারে ঘুম আর ভাঙ্গছে না
বাজিয়ে যাচেছ ফোন হামীম কামরুলশওকত হোসেন
শোয়াইব ভাই লেখা.. শোয়াইব ভাই লেখা.. শোয়াইব ভাই লেখা..
শামীম বেশ ঘুমাতে পারছে,ফোনে ওকে পাচেছ না

কবিতাগুচ্ছ- ৪


ফিরে চলা, ধুলোপায়ে


ফিরে যাওয়ার কথাই ভাবছি,ধুলোপায়ে

পিছনে রইল পড়ে দীর্ঘপথ,উটের বেদনা নিয়ে
পথ চলার কষ্টের কথাই ভাবছি

এই যে পা কেটেছে পাথর ও কাঁটায়,তার উপর ধুলোর আস্তরণ
রক্ত তাকেও যায় না চেনা,শুধুই হাঁটার স্মৃতি
পথ হারানোর স্মৃতি
কী লাভ জমিয়ে স্মৃতিভারফিরে চলা সেই ভালো,
স্মৃতিহীন,ধুলোপায়ে



পিতারযাত্রা

পিতা চলেছেন অস্তাচলে,আমরা তার পুত্র কন্যারা দুঃখিত মুখে
আতস কাচ ধরেছি তার সন্মুখে,বেদনা উঠছে  ফুপিয়ে,
ভাপ পড়ছে গায়ে,সামনে তার অরণ্য-গহনবন
অগস্থ্যযাত্রা, আজ অবেলায়

দারাপুত্র পরিবার কেউ যাবে না সাথে  ধর্মকথা
সত্যি হতে চলেছে আজ,অভিমানে ফুলে ফুলে উঠছেন পিতা
উপরন্তু এই দেশে পানীয় এমনকী খাদ্যকণাও দেবে না সাথে
যাত্রা ক্ষুধাপরিজন কাতর

কী আছে আমাদের দেয়ার,বিলাপ ছাড়া!




অস্তিত্ব


যে ছিল, আজ নেই,সেও আছে
এই বাতাসের ভেতর আছে,আছে সন্ধ্যার ভেতর

নাই বলে কিছু নেইআছে, সকলই আছে

যে ছিল নালন্দায়,তক্ষশীলায়,আজটেকে, ইনকায়
সেও আছে, আমাদের ভাবনার ভেতর,বোধের ভেতর

যে মুদ্রা হারিয়েছে দেবালয়ে তীর সন্ধ্যায়
যে গানে হারিয়েছে দরবার হতে
সেও আছে,লোকালয়ে আছে,পাখির কণ্ঠে আছে
সকলই আছে
কিছুই হারায় না,পারে না হারাতে
সময় ধরে রাখে গোপন মায়ায়

কবিতাগুচ্ছ- ৩


বগুড়ার পথে

বগুড়ার পথে পথে পড়ে আছে নিঃসঙ্গতা,ধুলার হাহাকার
ও আমার পুণর্ভবা তোমাকে নিয়ে ভাবি
তুমি কি এমনই আছ আমাকে ছাড়া

তোমার সাথে দেখা এক ম্লান বিধুর সšধ্যায় 
পুণ্ড্রে, যখন নিভে গেছে আলো নগরে আর
ইটের ফাঁকে ফাঁকে বাতাসের হাহাকার
সেই বেদনার ক্ষণে তুমি হাসিমুখে জলভারানত
আমি অবাক বিষ্ময়ে স্লিম তোমাকে দেখি

ও আমার প্রেম তোমাকে নিয়ে

তারপর ঘুরিয়ে গাড়ির চাকা ফিরেছি
ধুলা উড়িয়ে তোমার পথে
ও আমার পুণর্ভবা তোমাকে ঘিরে আছে নিঃসঙ্গতা

আমার হাহাকার


ন্ধুদের প্রত্যাবর্তন 


ন্ধুরা সবাই গেছে হাওয়ায় মিলিয়ে
বিলাতে,চীনে
আমিও দিয়েছি মন চাষাবাসে
ফলিয়েছি চীনেভুট্টা,বিলাতি বেগুন
আর ধান
হঠাৎ দেখি ধান ক্ষেতে সারি সারি শালিক
šধুরা তবে কি আসছে ফিরে?


পিতা যেদিন গেলেন


আকাশ চিরে যখন চলে গেল বিদ্যুৎ রেখা
আমি আমার স্ত্রীকে বললাম,দেখ পিতা গেলেন

যখন বাড়ি পৌঁছলাম তখন কান্নার রোল
আমিও শরীক হলাম

যখন তাঁকে নামানো হল কবরে
আকাশ ভেঙে নামলো বৃষ্টি
দেখ আমি স্ত্রীকে সত্যি বলেছিলাম
  

কবিতাগুচ্ছ-২


বাতাস প্রেমিক

এই অনন্ত চরাচরে মাঠের ওপারে
হেঁটে চলেছেন বাতাস, তিনি নটী
তার পায়ে চটি, ধূ ধূ ধূলি উড়ছে
তার খুরে
আর আমি জানালার এপারে
বসে আছি তার অপেক্ষায়

আমি কি তবে প্রেমিক পুরুষ?


সন্তরণ

জলে নেমেছি নেহাৎ জলের টানে
নেমে নেমে ক্রমশ মাঝখানে,দেখি ঠাই নেই
অগত্যা সন্তরণ
এই যে জলে আছি,চারপাশে শুধু ঢেউ,জলের ধ্বনি,কোলাহল
এই ধ্বনিরাশি,ঢেউরাশি,আর কত থাকা যায় উদ্দেশ্যহীন
একটা তীর তো দরকার

কোন তীরে যাবো তারা সব দূরে দুরে
অস্পষ্ট, যেন মায়া

তীরে যারা গেছে কেউ ফিরেনি
তীর নিয়ে আছে কবšধ গল্পাবলি

স্রোতের সাথে শুধুই ভেসে যাওয়া,উদ্দেশ্যহীন


ম্লানমুখে জীবন


মন জুগিয়ে চলি সদা তোমার
তবু থাকো ম্লানমুখে
তোমার জন্য আমার সকল দিনমান
ক্লান্ত সন্ধ্যা,নির্ঘুম রাত
রক্তফেনামাখা মুখে
তোমার জন্য শুধু তোমার জন্য
রক্ত পানি করে চলি
তবু থাক ম্লানমুখে,ওহে জীবন আমার



কবিতাগুচ্ছ- ১


পাখি জীবন


পাখি হয়ে থাকা,পাখি পাখি খেলা সারাটি জীবন
ওই যে তাল গাছের মাথায় তাল পাতায় বানানো ফ্ল্যাট
ড্রইং ডাইনিং দুইবাথ,কিচেন তার ভেতর খুনসুটি,ডিমপাড়া
ডিমের তায়ে তাকে রেখে খাদ্যের খোঁজে বাইরে যাওয়া
শিকারির তাড়া খাওয়া,তীরের মুখে মতিঝিল থেকে
একমুটো খুদ মুখে নিয়ে ফেরা নিত্যদিন
তারপর একদিন ডিম ফুটে ছানাপোনা-ক্লান্তদিন

তারপর ছানা পাখি হয়ে গেছে উড়ে
আমরাও পাখি,পাখি পাখি খেলা এইসব দিন



ওপার


ওপার একদিন এমনি ঘোর সন্ধ্যায় আকাশের মুখ কালো করে
বৃষ্টি নামবে,বৃষ্টি নামবে অঝোর ধারায়
কেউ কোথাও থাকবে না,শুধু মাথা নুয়ে গাছ
তার ডালে পাখি একাকি ভিজে যাবে
আর দূরে দৃষ্টির ওপারে
আমার চোখ জলে ভেজা চোখ

আকাশ ভেঙে নেমে আসা জলের ধারা
তোমার দু'চোখ দূর থেকে দেখবে



আত্মরতি


এই একেলা সন্ধ্যায় মেলে দিয়েছ নিজেকে নিজের কাছে
হূ হূ করে আসছে কষ্টেরা,বসতে দিচ্ছ বেদনার পিঁড়িতে

তারা কেউ উসকো খুসকো,কেউ এলোচুল,কারো মুখ বসন্তের
দাগে ভরা,কারো খড়িওঠা,মাখা গায়ে ধুরোবালি
তারা খুব শান্ত হয়ে বসেছে তোমার আসে পাশে
আর তুমি লিখে চলেছ নিজেকে নিজে

দুঃখ ছাড়া আজ কেউ পাশে নেই, রাখোনি
অথচ মনে কওে দেখো আজও ভোরে ঝির ঝির
বাতাস বয়েছিল,শিউলি জমেছিল ঘাসের ডগায়

এ দৃশ্যের মহিমা তুমি জানতে
                       
অথচ একেলা আজ বিরহ সন্ধ্যায়

শুক্রবার, ৩ আগস্ট, ২০১২

বিভূতিভূষণ কি নৈরাশ্যবাদী ছিলেন ?

বিভূতিভূষণ বন্দ্যাপাধ্যায়ের রচনায় আমরা প্রকৃতির এক শান্ত-স্নিগ্ধ রূপের পরিচয় পাই।গ্রামের মেঠোপথ, পাশের ঝোপঝাড় আর জঙ্গলের বর্ণনা পাই সব সময়। কিন্তু এই শান্ত স্নিগ্ধ প্রকৃতির, ঝোপঝাড়ের ভেতর দিয়ে সাপের মতো বয়ে চলে দারিদ্রের গোপন প্রবাহ।
অপু ট্রিলজিতে আমরা পাই তিন প্রজন্মের পরিচয়। প্রথম প্রজন্মের হরিহর দারিদ্রকে কাব্য সৌন্দর্য়র সাথে বহন করে।সে দারিদ্রকে তাড়ানোর স্বপ্ন দেখে কিন্তু তা বাস্তবে রূপায়িত হয় না। বরং দেখি সে দারিদ্রের কারণে গ্রাম থেকেই উন্মূলিত হয়ে যায়।
দ্বিতীয় প্রজন্মের অপুকেও আমরা দেখি দারিদ্রকে বাউণ্ডেলেপনার সাথে বহন করতে।পিতার দারিদ্রকেও যেন কপি করে, সাহিত্য চর্চার অজুহাতে।
তৃতীয় প্রজন্মের কাজলকে আমরা দেখি পিতার কাধে চড়ে গ্রামে ফিরে যেতে।আমরা বুঝতে পারি সেখানে সে অাবারও অপুরই জীবনের পুনরাবৃর্ত করতে যাচ্ছে।
বিভুতি ট্রিলজি কি তাহলে দারিদ্রের কপিকরণ কাহিনী? তাহলে কী বিভূতিভূষণ নৈরাশ্যবাদী ছিলেন?অশনি সংতেক কি তারই সংকেত কে বহন করে?


রবিবার, ২৯ জুলাই, ২০১২

মরিয়া জাগিয়া উঠা অথবা বাঙালকাণ্ড

শোয়াইব জিবরান 

DgvevZ© B‡Kv digvBqvwQ‡jb- †jLbK…Z¨ †kl Kwievi ci †jL‡Ki g„Zz¨ nBqv _v‡K| Avi evOvj‡`i †jLK gwievi ci RvwMqv D‡Vb| m¤úªwZ ZvB welgfv‡e †`Lv hvB‡Z‡Q| ûgvqyb Avn‡g` gwievi ci RvwMqv DwVqv‡Qb| evOvj‡`i  µ›`baŸwb kqZv‡bi ev‡· ev‡·, dvwRj †cvjvcvb‡Mv GdG‡g, jvDWw¯úKv‡i w¯úKv‡i  biK¸jRvi Kwi‡Z‡Q| Avgiv NygvB‡Z ch©šÍ cvwi bv Zv‡Mv nvcym bq‡bi †bvsiv K_vgvjvq| MZKvj iv‡Z †`wLjvg GK kqZv‡bi ev· ‡eªwKs wbDR wj‡L‡Z‡Q, ÔRbwcÖq K_v mvwnwZ¨K ûgvqyb Avn‡g‡`i bvMwiK †kvK mfvq Zuvi mv‡eK ¯¿x ¸j‡ZwKb Lvb †hvM`vb Kwiqv‡Qb|Õ gxivicÖf~ Zzwg Bnv‡Mv wbDR iæwP `vI| GBiKg wewea BZiZv Pwj‡Z‡Q| Aek¨ mKj K_vi g~j K_v †jL‡Ki wØZxqweevn msµvšÍ †bvsiv RwUjZv| Zuvnvi †jLvi welq †mLv‡b bvB|

ûgvqyb AvRv` Zuvnvi †jLv‡K ewjqvwQ‡jb Acb¨vm| GB K_vwU Zvn‡j eûcÖm‡½B ejv hvB‡e| Avgiv `yg Kwiqv ewjqv _vwK evsjv mvwnZ¨ nvRvi eQ‡ii| Aek¨ Zvi dj‡K ew¼gevey Zuvnvi KgjvKv‡šÍi `߇i KvuPv K`wji mv‡_ Zzjbv KwiqvwQ‡jb| Zv bvwK Avevi ˆ`wbK cwÎKvi cvZv w`qv †gvovBqv evRv‡i wewµ nq| Zuvnviv gnvRb| Avgiv Zv‡Mv gb eywSevi cvwi bv| ¯^vgx †KkeP›`ª ewjqvwQ‡jb-ÔAvnv, I wjLyK, I gb awi‡Z cvwiqv‡Q|Õ Avgiv aivawii g‡a¨ bvB| eD ev”Pv‡K awi‡Z cvwi‡jB nBj|

Z_vwc, Avgiv hLb fvweqv †`wL GB evsjv AvL¨vbmvwn‡Z¨ MxZ †Mvwe›`, ˆPZb¨PwiZvg„Z, KcvjKyÐjv, cvjv‡gŠ, †Mviv, c‡_i cuvPvjx, †XvivBPwiZ, †Ljvi cÖwZfv, wKsev ivû PÐv‡ji nvo †jLv nBqv‡Q- Avgv‡`i Mv KvuUv w`qv I‡V| †KkeRbbx mvi`v my›`ixi, ivgZby jvwnoxi ev Avãyi iv¾v‡Ki Rxebxi K_v bvwnev D‡jøL Kwejvg| B¸jvbI AvL¨vbe¯‘ nq|

ûgvqyb Avn‡g` Avgv‡`i wK‡kvi wK‡kvix‡Mv gb awi‡Z cvwiqvwQ‡jb- GgbB †Zv ïwbqv Avwm‡ZwQjvg| g‡b eywSqvwQjvg, Zuvnvi ¯’vb kirP›`ª,dvêybx gy‡Lvcva¨vq‡Mv av‡i Kv‡Q nqZ nB‡e| wKš‘ a›` jvwMj mv¤úªwZK gnvZ¥v‡Mv K_vevZ©v ïwbqv| evsjv GKv‡Wgxi ¯§iY mfvq Zuvnviv ZvK jvMv‡bv K_vevZ©v ewj‡Z‡Qb| gnvcwiPvjK gnvkq ûgvqyb Avn‡g`‡K jBqv gnv gnv cÖK‡íi †NvlYv w`qv‡Qb| Zv¾e e¨vcvi! Bnviv c~‡e© ûgvqyb cwoqv‡Qb Ggyb bgybv cvB bvB| ZvB‡j Kx Zvnviv mKj wKQz ev` w`qv GKiv‡Î ûgvqyb mgMÖ cwoqv †dwjqv‡Qb| Avi bZzb Kwiqv gnvZ¥ Dcjw× Kwiqv‡Qb? Av‡M ‡h ïwbZvg Ab¨ K_v| Kx Rvwb evcy| hw` Avgiv ewj m~h© c~e©w`‡K D`q nq- Zvn‡jI Avgv‡`i `yB †bÎx GKgZ nB‡eb Kxbv g‡b m‡›`n jq| Zuvnviv `yBRbI †`wLjvg ûgvqyb Avn‡g‡`i wel‡q AwaK g‡b‡hvMx! eywSjvg, Zvnvi Avn‡g‡`i RbwcÖqZv‡K gvb¨ Kwiqv‡Qb| Zuvnv‡`i †fv‡Ui gZje Av‡Q| Z‡e Avgv‡`i eyw×Rxex‡Mv gZje Kx jBqv? cÖv_©bv Kwi gncÖf~ mK‡ji g‡bvevÃv c~iY Kiæb| (Avwgb)

শুক্রবার, ২৭ জুলাই, ২০১২


মহাত্মা আহমদ ছফার দেহান্ত দিবসে: ছফাস্মৃতি

নব্বই দশকের তুঙ্গসময়  ঘোর গ্রীষ্মকাল তখন বাংলা একাডেমীর বটবৃক্ষতলায় আমাদের নিত্যদিনের আড্ডা চলিতেছিল মাথার উপরে  কাক সম্প্রদায় কাকা স্বরে  হল্লা করিয়া থাকে তাহাতে আপত্তি নাই কিন্তু তাহারা আমাদের  মস্তকে পুরিষ বর্ষণপূর্বক হল্লায় করিয়া থাকে ইহাতে জোর আপত্তি রহিয়াছে উপরন্তু তখন আমরা আমাদের সিরিয়র সকল কবিদের কবিতা লইয়া যারপর নাই অসন্তুষ্ট চঞ্চল কবিদের মার্কিং করেছে তাহাতে প্রায় সকলই ফেল করিয়াছেন  নজরুল তো অবশ্যই, ঠাকুর টেনেটুনে একমাত্র জীবনানন্দ আর চঞ্চল নিজে পাশ সেই সময় আমরা  শাহবাগে, পিজিতে, টিএসসিতে,বাংলা একাডেমীর বটবৃক্ষতলায় বসিয়া সকলের নামে নিত্য গীবত গাহিয়া থাকি আমরা বলিতে চঞ্চল আশরাফ, মুজিব ইরম, কবির হুমায়ুন, জেনিস মাহমুন, অনু হোসেন ইশাররফ হোসেন প্রমুখ মাঝে মাঝে সরকার আমিন যুক্ত হইয়া নবীদের মতো বাণী নাজেল করিতেন একদা এই বটবৃক্ষের তলায় আসর চলিতেছেল এমন সময় গ্যাটে ইনস্টিটিউটের একটি মাইক্রোবাসকে আমাদের আড্ডাস্থলের দিকে ধাবিত হইতে দেখা গিয়াছিল মাইক্রোবাস আসিল ভেতরে মহাত্মা আহমদ ছফা তিনি নামিলেন ঘোর গ্রীষ্মে তাঁর গলে কম্বল হাতে একগাদা আমন্ত্রণপত্র তাঁর বা জর্মণীর কোন মহাত্মার অনুষ্ঠানের বোধ হয়- এতদিন পর মনে নাই আমরা তেমন গা করিলাম না উপরন্তু কয়েক দিবস পূর্বে তিনি কমলকুমার মজুমদার বিষয়ে বিষবাক্য বলিয়াছিলেন আমার মন তাঁহার উপর প্রসন্ন ছিল না কেননা, তখন আমরা ধর্মীয় পুস্তকের বদলে ভোরে তাহাকে পাঠ করিয়া থাকি যারপর নাই ভক্তি কথা চলিল সুযোগ হাতছাড়া করিলাম না বলিয়া বসিলাম, গাভীবৃত্তান্ত কোন পদের  লেখা তিনি খানিক চুপ রহিলেন তারপর কহিলেন, ঠিকাছে, আমি পারি নাই আপনারা ষাড়েরা ষাড়বৃত্তান্ত লিখেন কহাবাহুল্য, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যারগিরি করিয়া বেড়াই তাঁহার হাঁপানীর টান উঠিল চলিয়া গেলেন
২.
তখন আজিজে মহাত্মা বিজুর দোকান সবে জমিয়া উঠিয়াছে মৎ প্রণীত শব্দপাঠ দ্বিতীয় সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। সেই অহংকারে মহাত্মার দোকানের সামনে খাড়াইয়া একদা বাতাস খাহিতেছি দেখিলাম আহমদ ছফা আসিতেছেন দেখিলাম, তাঁহার হাতে উন্মুক্ত ছোরাখ- জিজ্ঞাসি, ছফা ভাই, কাহিনী কী? তিনি জিজ্ঞাসিলেন, আপনে খোনকারকে দেখছেনকেন কী হইয়াছে তিনি উত্তেজিত হইয়া বলিলেন, আমি তাহাকে মারিতে চাই কারণ জিজ্ঞাসিলে ঘটনা বলিলেন আমি বলিলাম তিনি আপনার নামে বাজে কথা বলিলে আপনিও বলুন ছোরার তো কাম নাই বিষয়টা ব্যক্তিগত না বাংলা সাহিত্যে খোনকার পদবির কোন কবি নাই ও থাকতে পারে না- ইহারা বাংলা সাহিত্যের বালা আমি বাংলা সাহিত্য থেকে বালামুসিবত দূর করতে চাই তিনি গজগজ করিয়া চলিয়া গেলেন সে অবধি বাংলা সাহিত্যে সকলেই বর্তমান রহিয়াছেন
৩.
মনে ভাবিয়া দেখিলাম, তাঁহারা সকলেই মহাজন তাঁহারা মহালীলা সম্পন্ন করিয়া স্বর্গত হইয়াছেন আর সাহিত্যে বর্তমান আছেন আমাদেরও তেজ কমিয়াছে বৈকালে মন খারাপ করিয়া শাহ আব্দুল করিমের গান শুনিয়া থাকি আর মহাজনদের কিতাবসমূহ ভক্তিভরিয়া পাঠ করিয়া থাকি মীরার প্রভূ নিশ্চয় আমাদের ক্ষমা করিবেন (আমেন)